দেখতে দেখতে অনেকগুলো যুগ পার হয়েছে, তাই না? 'দিন' শব্দটা ব্যবহার করলে সময়ের আপেক্ষিকতা ঠিক যেনো বোঝানো যায় না। তোমার অনুপস্থিতির সময়গুলো আমার জন্যে অনেক বেশি প্রলম্বিত ছিল।

আজ বিকেল বেলা ঘর থেকে বের হয়ে যখন ব্যস্ত রাস্তা ধরে চুপচাপ হাঁটছিলাম আর ভেতরে ভেতরে নিজেকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছিলাম এই বলে যে, তোমার অনুপস্থিতি আমায় এতোটুকু বিচলিত করে না, আমায় এতোটুকু কষ্ট দেয় না- তখন তুমি কোথায় আছো, কি করছো, আমার জানতে ইচ্ছে হয়...

...এবং পরমুহূর্তেই ইচ্ছেটা আর হয় না। কারণ, মূল্যহীন ইচ্ছের মূল্য দেয়া আমি ভুলে যেতে পারছি আজকাল।

আমি তো জানতামই, তুমি থাকতে আসো নি। কিন্তু সেটা কি তুমিও জানতে না? তবু এমন করে আমার হাত ধরে সেদিন আকাশের রংধনু কেনো দেখিয়েছিলে?... না, দোষারোপ তোমায় করছি না। আমার ভেতরের বয়ে যাওয়া ঝড়গুলোর জন্যে আমি কাউকেই দোষারোপ করি না। নিজের কোন অবস্থার জন্যেই কাউকে দোষারোপ করতে হয় না- জীবন থেকে এই শিক্ষা আমি নিয়েছি তোমার সাথে দেখা হবার আগেই। আমি জানি, কেন এমনটা হয়েছে, যা তোমার জানা নেই, প্রয়োজনও নেই। তুমি শুধুই দম দেয়া পুতুলের ভূমিকা নিয়েছ মাত্র। দমের পুতুলের সাথে সখ্য পাতানো যায়, রাগ করাও যায়, তাতে পুতুলের কিছু যায় আসে না।

যে চলে যেতে চায়, তাঁকে ধরে রাখতে নেই, তাঁকে যেতে দিতে হয়- দেরিতে হলেও এই কথাটার মর্ম তোমায় হারিয়ে বুঝেছি। এজন্যে, কোন একদিন রাস্তার ওইপাশে তোমায় দেখতে পেলে এপার থেকেই উঁচু গলায় চিৎকার করে ধন্যবাদ জানিয়ে দেবো...

কারণ তোমার কাছে যাওয়ার জন্যে আমায় রাস্তা পার হতে হবে, শারীরিক পরিশ্রম হবে, সময় খরচ হবে- আর এই অবসরটুকু যেনো তোমার জন্যে আমার অবশিষ্ট না থাকে।