অনুতাপ এবং উপলদ্ধি

আমার নাম জন। বেশ কিছুদিন দ্বিধার ভেতরে থাকার পর অবশেষে এই লিখাটা লিখতে পারছি। নিজের ভেতরে জমে যাওয়া এই কথাগুলো আমাকে প্রকাশ করতেই হবে।

নিজের সম্পর্কে একটু বলিঃ আমার বয়স এখন ৪৬, পেশায় একজন ব্যাংকার, কিন্তু জীবনের প্রায় পুরোটা সময় আমি যা চেয়েছি, তার উল্টো কাজটাই করেছি। গত ছাব্বিশটা বছর ধরে সপ্তাহে ছয় দিন নয়টা-পাঁচটা চাকরি করতে করতে জীবনের স্বপ্ন, আকাঙ্খাগুলো সব হারিয়ে ফেলেছি। জীবনের পথে যে রাস্তাটা নিরাপদ, প্রতিটা বার আমি সেটাই বেছে নিয়েছি- আর আমার এই মানসিকতা, আমার জীবনটাকেই বদলে দিয়েছে।

তোমাকে - ০১

হ্যাঁ, তোমাকেই বলছি...

তুমি কি জানো, আমার পৃথিবীতে এখনো রাতের পর দিন আসে, তারপর দিনের পর রাত, আর চিরন্তন এই আবর্তনে কি এক দমকা ঝড়ের মতোই না তুমি এসেছিলে। ঝড় যতো দমকাই হোক,একসময় থেমে যায়, মিলিয়ে যায়। তেমনি করেই তুমি যেনো মিলিয়ে গেলে। যাবার আগে এমন এক বাস্তবতায় ঠেলে ধাক্কা দিয়ে আমায় ফেলে দিয়েছো যে, যে বাস্তবতা তোমার পার্থিব অস্তিত্ব আমার কাছে অস্বীকার করতে চায়।

দিন প্রতিদিন - ০৪

একজন দক্ষ লেখক প্রতিদিন নিয়ম করে লিখবেন। লিখাটা তাঁর কাছে নেশা পেশা দুটোই। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, লিখা না আসলেও সাদা পৃষ্ঠার সামনে লেখকের বসে থাকা উচিত। কারনটা স্বাভাবিক; লিখা প্রতিদিন আসে না, আসলেও লিখতে অনেক সময় ইচ্ছে করে না। তবু লিখার উপকরন নিয়ে বসে থাকতে হয়।

আমি লেখক নই। লিখাটা আমার জন্যে সেরকম বাধ্যতামূলক নয়, তবু প্রতিদিন আমি কিছু না কিছু লিখতে চেয়েছি- এবং ব্যর্থ হয়েছি। এই ব্যর্থ হবার কারন অলসতা ছাড়া অন্য কিছু আমি খুঁজে পাচ্ছি না।

দিন প্রতিদিন - ০৩

দেখতে দেখতে আরেকটা শনিবার চলে গেলো। একটা সময় ছিলো, শনিবারের দিনগুলো শুরু হতো মোবাইলটা এরোপ্লেন মোডে দিয়ে। কারন পরিচিত, অপরিচিত কারও ফোন ধরার ইচ্ছে আমার হতো না। চাইতাম না, এইদিন কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করুক। কারনটা আর কিছুই না, কাজের কথা, চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেয়ার কথা, সংসারের নিত্যদিনের একঘেয়ে ঘটনা শুনতে শুনতে, দেখতে দেখতে, অফিসে যাওয়ার পথে, আসার পথে টিকে থাকার সংগ্রামে ক্লান্ত, শ্রান্ত, বিরক্ত, তবু আশান্বিত, ব্যস্ত মানুষদের দেখতে দেখতে যেনো হাঁপিয়ে উঠতাম। তাই একটা দিন নিজের জন্যে রেখে দিতে পছন্দ করতাম।